নবিজি সা. : যাঁর আদর্শে বিমোহিত পৃথিবী

মানবজাতির জন্য তাদের রবের পক্ষ থেকে সবচেয়ে বড় উপহার হলো হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম; আল্লাহ তাআ’লা যাঁর ওপর পবিত্র কুরআন নাজিল করেছেন।

কেমন ছিল তাঁর চরিত্র? কিংবা কেমন মানুষই বা তিনি ছিলেন? তাঁর সমগ্র জীবন অনুসরণ করা উম্মত হিসেবে আমাদের অবশ্যকর্তব্য। সুতরাং রাসুলুল্লাহর (সা.) জীবনকে অনুসরণ করতে হলে আমাদের অবশ্যই তাঁর সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা অর্জন করতে হবে। ড. রাগিব সারজানির আরবি গ্রন্থ ‘উসওয়াতুল লিল আলামিন’ যার বাংলা অনুবাদ মুহাম্মদ পাবলিকেশন থেকে ‘নবিজি সা. : যাঁর আদর্শে বিমোহিত পৃথিবী’ রাসুলুল্লাহকে (সা.) আমাদের কাছে নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়ারই একটি প্রয়াস।

বাংলাভাষী ইতিহাস পাঠকের কাছে ড. রাগিব সারজানি এক পরিচিত নাম। পেশায় ডাক্তার হলেও ইসলামের ইতিহাস নিয়ে তার করা কাজগুলো নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। তার লেখা ‘তাতারীদের ইতিহাস’ বইটি পাঠ করে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম।

পুরো বই তিনটি অধ্যায়ে সাজানো। অধ্যায়গুলো আবার বেশ কয়েকটি পরিচ্ছেদে ভাগ করে আলাদা আলাদা বিষয় নিয়ে সজ্জিত। প্রথম অধ্যায়ের শিরোনাম- নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষ ছিলেন। এই অধ্যায়ে নবিজির চারিত্রিক মাধুর্য, মানুষের সঙ্গে তাঁর আচরণ, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং প্রাণির সঙ্গে তাঁর আচরণ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

দ্বিতীয় অধ্যায়ের শিরোনাম- নবিজির (সা.) নবুওয়্যাতের দলিলসমূহ। এখানে আলোচিত বিষয়গুলো হলো- তাঁর মুজিজাসমূহ; যা তিনি আল্লাহর কাছ থেকে অর্জন করেছিলেন, বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিরসনে তাঁর অবদান, পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহে নবিজির আগমন সংবাদ।

তৃতীয় অধ্যায়ের শিরোনাম- অমুসলিমদের সাথে নবিজির (সা.) আচরণ। এবং একেবারে শেষ অংশে আলোচনা করা হয়েছে রাসূল (সা.) সম্পর্কে বিভিন্ন অমুসলিম মনীষীদের মূল্যায়ন।

পুরো বইটি পড়ার সুযোগ এখনও হয়নি। সংক্ষিপ্ত পিডিএফ পড়ে যতটুকু বুঝলাম, ড. রাগিব সারজানির এই গ্রন্থটি সীরাত হিসেবে অনন্যই হবে। এমনিতেই সীরাত সাহিত্যের প্রতি আমার একপ্রকার বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে। আশা করা যায়, ‘নবিজি সা.: যাঁর আদর্শে বিমোহিত পৃথিবী’ আমার মতো সীরাতপ্রেমী পাঠকের তৃষ্ণা মেটাতে সক্ষম হবে।

মুহাম্মদ পাবলিকেশন দারুণ একটা কাজ করেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আল্লাহ তাদের উত্তম প্রতিদান দিন।